সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ বিস্ফোরণ নিহত ৩৫
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত দুই শতাধিক।
আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের চমেক হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্তত ৩০ জনকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সকাল ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২৪টি ইউনিট ১১ ঘণ্টা চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
কন্টেইনার বিস্ফোরণের শব্দ এখনও থেমে থেমে শোনা যাচ্ছে। বিস্ফোরণে কয়েক কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে।
বিস্ফোরণস্থলের আশেপাশের শতাধিক ঘরবাড়ি এবং প্রায় ২০টি মসজিদের জানালা-দরজা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
এ ঘটনায় সীতাকুণ্ডসহ গোটা চট্টগ্রাম শহরে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। হাসপাতালগুলোতে স্থান স্বল্পতার কারণে রোগীদের চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত হাসপাতালেও স্থানান্তর করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মোঃ ইলিয়াস চৌধুরী চট্টগ্রামের সকল চিকিৎসকদের হাসপাতালে এসে চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে নয়টার দিকে কনটেইনার ডিপোতে আমদানি করা কেমিক্যাল বোঝাই একটি কনটেইনারে আগুন লাগে।
অল্প সময়ের মধ্যে তা বিভিন্ন পাত্রে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কুমিরা ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর হঠাৎ একটি কেমিক্যাল বোঝাই পাত্রে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এতে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, কারখানার শ্রমিক ও বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়।
হাসপাতাল সূত্রে :
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্নভাবে দগ্ধ ও আহত শতাধিক মানুষকে সেখানে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ৯০ জন দগ্ধ হয়েছে। রোববার সকালে দগ্ধ ও আহত অনেককে হাসপাতালে আনা হচ্ছে। সার্জনরা আশপাশের চিকিৎসকদের জরুরি ভিত্তিতে কাজে আসার নির্দেশ দিয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবকদের রক্তদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন সিকদার জানান, কেমিক্যালের কারণে আগুনের তীব্রতা কমছে না। কনটেইনারটি এখনও মাঝে মাঝে বিস্ফোরিত হচ্ছে। কন্টেইনার ডিপোর কর্মীরা, পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে যৌথ অংশ নেন।
সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডে হতাহতদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়ে নিহতদের পরিবার ও প্রিয়জনদেরকে আল্লাহ তা’য়ালা ধৈর্য্য ধরার তৌফিক দান করুন। আহতদেরকে আল্লাহ পাক দ্রুত ও পূর্ণ সুস্থতা দান করুন।
বিপন্ন এই মানুষ ও পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর জন্য হৃদয়বানদের প্রতি আন্তরিক আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ধর্মপ্রান নেতা-কর্মী।