You are currently viewing বিরল স্মৃতিস্তম্ভ সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ

বিরল স্মৃতিস্তম্ভ সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ

বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের প্রাচীন শহরগুলোর একটি সৈয়দপুর। সৈয়দপুর শহরেই বিরল স্মৃতিস্তম্ভ চিনি মসজিদ বা চাইনিজ মসজিদ অবস্থিত। 

এই সুন্দর মসজিদটি ১৮৬৩ সালে শত শত দক্ষ কারিগর এবং শিল্পীদের নিবেদিত কাজের ফলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মসজিদের সাথে ২৪৩টি শঙ্কর মার্বেল পাথর সংযুক্ত রয়েছে, ২৫ টন চীনামাটির টুকরো পাথরের সাথে মসজিদের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। এই বিশাল মসজিদটিতে ২৭টি মিনার রয়েছে যার মধ্যে ৫টি এখনও অসম্পূর্ণ। 

চিনি মসজিদের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, ১৮৬৩ সালে হাজী বাকের আলী এবং হাজী মুকু ইসলামবাগ ছোলা ও বাঁশ দিয়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। 

পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় টিন দিয়ে তা রূপান্তর করা হয়। এলাকার লোকজন মাসিক আয়ের একটি অংশ দিয়ে মসজিদের জন্য একটি তহবিল গঠন করেন। পরে শঙ্কু নামে এক হিন্দু ব্যক্তি দৈনিক ১০ আনা মজুরি দিয়ে মসজিদের নতুন নির্মাণকাজ শুরু করেন। স্থানীয়রা তাকে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সাহায্য করতে থাকে।

চীনামাটির থালা, কাঁচের ভগ্নাংশ ফেলে ইট-সুরকি দিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে সুগারিং বা চিনির দানার কাজ বলে। তাই এই মসজিদের নাম চিনি মসজিদ বা চাইনিজ মসজিদ।

এটিকে চীনা মসজিদও বলা হয় কারণ পুরো মসজিদটি চীনা মাটির পাত্রের ভগ্নাংশে আবৃত। আর এই চিনাওয়্যার আনা হয়েছে কলকাতা থেকে। মসজিদটির ডিজাইন করেছেন মোঃ মোখতুল ও নবী বক্স। মসজিদের অনন্য কারুকার্য দেখে সত্যিই মুগ্ধ হতে হয়।

মসজিদের ছাদে ফুলদানি, ফুলের গুচ্ছ, গোলাপ, বৃন্তে একটি ফুল, চাঁদ ও তারা খোদাই করা আছে। সমসাময়িক আরবীয় ক্যালিপ্ট্রা দেখেও মুগ্ধ হতে হয়। এই মসজিদ নির্মাণে প্রচুর মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। চিনি মসজিদের সৌন্দর্য দেশ-বিদেশের প্রচুর পর্যটকদের আকর্ষণ করে, তাই তারা সেখানে ছুটে আসেন।

বিরল স্মৃতিস্তম্ভ চিনি মসজিদের সৌন্দর্য নিজ চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। এই মসজিদের পিছনে খ্রিস্টানদের একটি প্রাচীন কবরস্থান রয়েছে।

চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ দেখতে কি ভাবে যাবেন ?

কম খরচে ঢাকা থেকে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে সরাসরি সৈয়দপুর পৌঁছানো যায়। এছাড়াও গাবতলী, কলেজগেট, মহাখালী থেকে সরাসরি সৈয়দপুর পর্যন্ত অনেক বাস সার্ভিস চলছে।

আকাশপথেও সরাসরি সৈয়দপুর যেতে পারেন।

সৈয়দপুরে সপ্তাহে দুই দিন ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ এবং বেঙ্গল এয়ারওয়েজের প্রাইভেট ফ্লাইট চলাচল করে।

Leave a Reply