You are currently viewing পিরোজপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি মোমিন মসজিদ

পিরোজপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি মোমিন মসজিদ

পিরোজপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি মোমিন মসজিদ

বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী মোমিন মসজিদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কাঠের হস্তশিল্পে সমৃদ্ধ মুসলিম স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন।

পুরো মসজিদটি কাঠের কাজ এবং ক্যালিগ্রাফি ইনলাইড উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

তাদের সংযোগ করার জন্য লোহা বা তারকা ব্যবহার করা হয়নি। সৌন্দর্যায়নে সব প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করা হয়।

১৯১৩ সালে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার বুড়িরচর গ্রামের বাসিন্দা মমিন উদ্দিন আকন নিজ বাড়িতে এই মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ১৯২০ সালে সাত বছরে এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি মোমিন মসজিদ

২১ জন দক্ষ কারিগরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল মমিন মসজিদ একটি অনন্য কাঠের কাজ। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১৬ হাত, প্রস্থ ১২ হাত এবং উচ্চতা ১৫ হাত। চার দিকের বেড়া তিনটি ভাগে বিভক্ত। এর উপরে ও নিচে কাঠের কাজ করা হয়েছে। দুই পাশে ডবল বেড়া। ভেতরে একটা আর বাইরে আরেকটা। ভিতরের কারুকাজ করা বেড়া খোলা এবং পৃথক করা যেতে পারে।

ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি মোমিন মসজিদ

বাংলাদেশের অধিকাংশ মসজিদ বাঁশ-টিন, ইট-বালি-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি, তবে কাঠের মসজিদ খুবই বিরল। যদিও এই ধরনের কাঠের মসজিদ একসময় ভারতের কাশ্মীরে ছিল বলে জানা যায়।

বুড়িচর গ্রামের যুবক মমিন উদ্দিন আকন বাড়ি থেকে দূরে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া কঠিন হওয়ায় মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। ইচ্ছানুযায়ী বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে হস্তশিল্পের নকশা ও ক্যালিগ্রাফি সম্পর্কে ধারণা পান।

ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি মোমিন মসজিদ

সাদাসিধে জীবনযাপনে অভ্যস্ত মমিন উদ্দিন একটি সাধারণ বাড়িতে থাকতেন এবং সুন্দর ক্যালিগ্রাফি ও প্রাকৃতিক ফুল, ফল ও গাছের আদলে মসজিদ নির্মাণে আত্মনিয়োগ করেন।

মসজিদটি নির্মাণের জন্য তিনি চট্টগ্রাম ও মিয়ানমার থেকে লোহা ও সেগুন কাঠ সংগ্রহ করেন। এ সময় তিনি বরিশাল জেলার স্বরূপকাঠি থানা থেকে ২১ জন কারিগর নিয়োগ করেন। তার তত্ত্বাবধানে মসজিদের পুরো পরিকল্পনা, কারুকাজ, ক্যালিগ্রাফি তৈরি হয়। মসজিদের প্রবেশপথ ও খিলানে একটি ক্যালিগ্রাফিক নকশা স্থাপন করা হয়েছে।

ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি মোমিন মসজিদ

বৃষ্টি, বন্যা এবং যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মসজিদের রং ও কাঠামোর কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের যথাযথ তদারকির জন্য মমিন উদ্দিন আকনের নাতি পত্রিকায় লিখেছেন। ফলস্বরূপ, ২০০৩ সালে, বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই কাঠের মসজিদটিকে পুরাকীর্তি হিসাবে ঘোষণা করে এবং এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয়।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সর্বশেষ ২০০৮ সালে মসজিদটির সংস্কার সম্পন্ন করে।

This Post Has 3 Comments

  1. XRumerTest

    Hello. And Bye.

Leave a Reply